ঢাকা,শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪

তীব্র দাবদাহে চকরিয়ায় জনজীবন বিপর্যস্ত

মিজবাউল হক :
অতিরিক্ত দাবদাহের কারণে চকরিয়ায় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। রাস্তাঘাট, হাটে বাজারে মানুষের আনাগোনা নেই বললে চলে। অফিস, আদালত ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে মানুষের গতি থমকে গেছে। অতিরিক্ত গরমে ছড়িয়ে পড়ছে বিভিন্ন ধরণের অসুখ বিসুখ ও ভাইরাস জনিত রোগ। একদিকে তীব্র গরম অন্যদিকে বিদ্যুৎ এর ঘনঘন লোভশেডিং সাধারণ মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে।
জানা যায়, গত ক’দিন ধরে সারাদেশে তীব্র গরমে শুরু হয়েছে। গরমে তীব্র খরতাপে জনজীবনে নেমে এসেছে বিপর্যয়। বৃষ্টি হওয়ার কোন লক্ষণও দেখা যাচ্ছে না। ছাত্রছাত্রীরা স্কুল মুখি হতে পারছে না। শ্রমজীবি মানুষ ঘর থেকে বের হচ্ছে না। হঠাৎ করে থমকে গেছে মানুষের দৈনন্দিন কার্যক্রম। গরমের কারণে স্থবির হয়ে অর্থনৈতিক জীবন যাত্রা। পৌরশহরের বাণিজ্যিক বিপনি বিতান গুলোতে কেনাকেটা করতে আসা ক্রেতারা তীব্র গরমে হাফিয়ে উঠেছে। ঠিকমতো কেনাকাটা করতে পারছে না। বিভিন্ন এলাকায় এখনো ধান ও হরেক রকম শাক-সবজি দেখা যাচ্ছে মাঠের মধ্যে। কিন্তু অতিরিক্ত খরতাপে যথা সময়ে ঘরে তুলতে পারছে না কৃষকরা। অন্যদিকে তিব্র গরমের মধ্যে যোগ হয়েছে চকরিয়ায় বিদ্যুৎ এর ভয়াবহ লোডশেডিং। ঘনঘন বিদ্যুৎ যাচ্ছে আর আসছে। ৩-৫ মিনিটের বেশি স্থায়ী হচ্ছে না বিদ্যুৎ। এতে করে ঘরবাড়ি, অফিসের টিভি, ফ্রিজ ও বিভিন্ন ধরণের বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি নষ্ট হওয়ার উপক্রম হচ্ছে। তাছাড়া পৌরশহরের মার্কেটের বিদ্যুতের বিকল্প ব্যবস্থার জন্য স্থাপিত জেনারেটর গুলোও ঠিকমতো সার্ভিস দিতে পারছে না। জেনারেটর গুলো অতিরিক্ত বিদ্যুৎ ধারণ ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। যার কারণে বার বার সমস্যা দেখা দিয়ে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে জেনারেটর গুলো। এতে হাফিয়ে উঠেছে সাধারণ মানুষ গুলো। সরেজমিনে দেখা গেছে, দৈনিক পারিশ্রমিকে নির্মাণ শ্রমিক, মৎস্য, লবণ ও মৌসুমী সবজি ক্ষেতের কৃষক, কুলির মতো শ্রমজীবিরা তিব্র গরমের কারণে কর্মহীন হয়ে পড়েছে। এতে করে অর্থনৈতিক বিপর্যয় নেমে এসেছে।
এদিকে অতিরিক্ত গরমের কারণে সব বয়সি মানুষের মাঝে বিভিন্ন ধরণের রোগ ব্যাধি দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে হিট স্ট্রোকের ঝুকিতে রয়েছে মানুষ। গত ককেদিন ধরে প্রচন্ড গরমে ডায়েরিয়া, শরীরে চুলকানী, জ্বর সহ বিভিন্ন রোগ আক্রান্ত রোগীদের ভিড় দেখা গেছে চকরিয়া সরকারি হাসপাতালে। চকরিয়া সরকারি হাসপাতালের আরএমও ডা: ছাবের আহমদ জানান, অতিরিক্ত গরমের কারণে মানুষের মধ্যে এধরণের রোগ দেখা দিয়েছে। গরমের মধ্যে খাওয়া দাওয়ার ব্যাপারে সর্তক ও কোন ধরণের বাসি খাবার না খেতে পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
চকরিয়া বিদ্যুৎ বিভাগের আবাসিক প্রকৌশলী ফয়জুল আলীম আলো বলেন, সম্প্রতি কালবৈশাখী ঝড়ে আশুগঞ্জে বিদ্যুতের টাওয়ার পড়ে যাওয়ায় মারাত্মকভাবে বিদ্যুৎ বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। সেদিন থেকে চকরিয়াতে বিদ্যুৎ সরবরাহে সমস্যা দেখা দিয়েছে। দোহাজারি ও ত্রিপুরা আনা বিদ্যুৎ দিয়ে কোন রকম চালিয়ে যাচ্ছি। ঘনঘন লোডশেডিং আরও ৪-৫দিন থাকবে বলে তিনি জানান।

পাঠকের মতামত: